ক্রেতাদের জন্য সুসংবাদ: ভরিতে সাড়ে দশ হাজার টাকা কমল স্বর্ণের দাম!
২৯ অক্টোবর ২০২৫ সোনার দাম – দেশের বাজারে সোনার দামে ঐতিহাসিক পতন ঘটেছে। একদিনের ব্যবধানে প্রতি ভরিতে ১০ হাজার ৪৭৪ টাকা কমিয়ে নতুন দর নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এই বিপুল পরিমাণ মূল্যহ্রাসের ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম নেমে এসেছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮০৯ টাকায়, যা ক্রেতাদের মধ্যে বড় স্বস্তি এনে দিয়েছে।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর ২০২৫ সোনার দাম ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি ছিল ২,০৪,২৮৩ টাকা, আজ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস এই নতুন দাম ঘোষণা করে, যা আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) থেকে দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে কার্যকর হয়েছে। স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য বড় আকারে কমে যাওয়ার কারণে এই অভূতপূর্ব মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাজুস।
আজকের স্বর্ণ ও রুপার দাম: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ (বাজুস নির্ধারিত)
১. স্বর্ণের দাম (প্রতি ভরি ১১.৬৬৪ গ্রাম)
নিচে বিভিন্ন ক্যারেটের সোনার বর্তমান মূল্য এবং মূল্যহ্রাসের বিস্তারিত দেওয়া হলো:
| ক্যারেট | প্রতি ভরি (টাকা) | প্রতি গ্রাম (টাকা) | পরিবর্তনের পরিমাণ (ভরি) |
| ২২ ক্যারেট | ১,৯৩,৮০৯ | ১৬,৬১৬ | ১০,৪৭৪ টাকা হ্রাস |
| ২১ ক্যারেট | ১,৮৫,০০৩ | ১৫,৮৬১ | ৯,৯৯৬ টাকা হ্রাস |
| ১৮ ক্যারেট | ১,৫৮,৫৭২ | ১৩,৫৯৫ | ৮,৫৭৩ টাকা হ্রাস |
| সনাতন পদ্ধতি | ১,৩১,৬২৮ | ১১,২৮৫ | ৭,৩১৩ টাকা হ্রাস |
২. রুপার দাম (অপরিবর্তিত)
সোনার দামে বড়সড় পতন ঘটলেও, দেশের বাজারে রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজুস নির্ধারিত বর্তমান রুপার দর নিম্নরূপ:
| ক্যারেট | বিশুদ্ধতা (খাঁটি) | প্রতি ভরি (টাকা) | প্রতি গ্রাম (টাকা) |
| ২২ ক্যারেট | ৯১.৬৭% | ৪,২৪৬ | ৩৬৪ |
| ২১ ক্যারেট | ৮৭.৫% | ৪,০৪৭ | ৩৪৭ |
| ১৮ ক্যারেট | ৭৫% | ৩,৪৭৬ | ২৯৮ |
| সনাতন পদ্ধতি | পরিবর্তনশীল | ২,৬০৯ | ২২৩ |
দ্রষ্টব্য: এই মূল্যে ৫% ভ্যাট ও ন্যূনতম ৬% মজুরি অন্তর্ভুক্ত নয়। গয়নার ডিজাইনের ভিত্তিতে মজুরি পরিবর্তন হতে পারে।
ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিসিস: কেন এত বড় পতন?
এই বিশাল অঙ্কের মূল্যহ্রাসকে আর্থিক বিশ্লেষকরা আন্তর্জাতিক বাজারের একটি বড় সংশোধনের ফল হিসেবে দেখছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, ডলারের দুর্বলতা এবং মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কায় সোনা (গোল্ড) ‘সেফ হেভেন’ সম্পদ হিসেবে দ্রুত দাম বাড়িয়েছিল।
- তেজাবি সোনার দাম হ্রাস: স্থানীয় বাজারে পিওর গোল্ড বা তেজাবি সোনার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। স্থানীয় ডিলাররা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম দামে স্বর্ণ আমদানি করতে পারায় এই মূল্যহ্রাস সম্ভব হয়েছে।
- আন্তর্জাতিক বাজারের স্থিতিশীলতা: বিশ্ব অর্থনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতার আভাস পাওয়ায় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার নিয়ে কঠোর অবস্থানে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ থেকে নিজেদের পুঁজি তুলে নিচ্ছেন। এই প্রবণতা বিশ্ববাজারে সোনার দাম কমিয়েছে, যা দেশীয় বাজারে প্রভাব ফেলেছে।
- ক্রেতাদের জন্য সুযোগ: টানা দু’দিনের মূল্যহ্রাসের ফলে ২২ ক্যারেট সোনার দাম দুই লাখ টাকার নিচে নেমে যাওয়ায় এটি বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ ক্রেতাদের জন্য গহনা কেনা বা বিনিয়োগের একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে।

